স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদশে, ১৯৮৩ এর ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৩ ধারায় ইউনিয়ন পরিষদের র্কাযাবলীর কথা বলা হয়ছে।ইউনিয়ন পরিষদের কাজগুলো মূলত পাঁচ ভাগে বিভক্ত। ইউনিয়ন এলাকায় পৌর,পুলিশ ও নিরাপত্তা,রাজস্ব ও প্রশাসন,উন্নয়ন ও দা্রিদ্র দূরীকরণ এবং বিচার কাজ করে ইউনিয়ন পরিষদ।
পৌর র্কাযাবলী
পুলিশ ও নিরাপত্তা
রাজস্ব ও প্রশাসন
উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণ
বিচার
পৌর কার্যাবলী
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ)অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ৩০ ধারায় পৌর কাজের কথা বলা হয়েছে। পৌর কার্যাবলীবাধ্যতামূলক ও ঐচ্ছিক কার্যাবলী এই দুই ভাগে বিভক্ত। তবে এই কাজগুলো ছাড়াওসরকার সকল বা নির্দিষ্ট কোন ইউনিয়ন পরিষদকে ভিন্ন কোন দায়িত্ব পালনেরনির্দেশ দিতে পারে। প্রচলিত অন্য কোন আইনের মাধ্যমেও সরকার ইউনিয়ন পরিষদকেদায়িত্ব দিতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদের বাধ্যতামূলক কাজ ১০ টি এবং ঐচ্ছিক কাজ৩৮ টি।
বাধ্যতামূলক কার্যাবলী
ঐচ্ছিক কার্যাবলী
ইউনিয়ন পরিষদ পৌর ও উন্নয়ন কাজের আওতায় সামাজিক,অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক ৪টি দায়িত্ব পালন করে। যথা:
যোগাযোগ
শিক্ষা,কৃষি,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
পানীয় জল সরবরাহ
সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ
পুলিশ ও নিরাপত্তা
সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেগ্রামীণ এলাকার গ্রাম পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা এবং তাদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ওশিষ্টাচার নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের চাকুরির শর্তাবলী নির্ধারণ করে। অধ্যাদেশেরপ্রথম তফসীলের দ্বিতীয় অংশে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর ক্ষমতা ও দায়িত্বগুলোনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক যদি মনে করেন যে কোন ইউনিয়ন বাতার অংশবিশেষে গ্রাম প্রতিরক্ষা বা জননিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণকরা দরকার, তাহলে তিনি আদেশ জারির মাধ্যমে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।তাঁর আদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন বা অংশবিশেষে সক্ষম যুবক পুরুষ বসবাসকারী টহলদেন। জেলা প্রশাসকের আদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ তার ক্ষমতা প্রয়োগ এবংদায়িত্ব পালন করে।
গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণ ও তাদেরমালামালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ইউনিয়ন পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব। এদায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ মহল্লাদার ও দফাদার নিয়োগ করে।মহল্লাদার ও দফাদারদের কাজ হচ্ছে ইউনিয়নের গ্রাম ও মহল্লায় প্রহরারব্যবস্থা করা এবং পুলিশকে অপরাধ দমনে যথাসাধ্য সাহায্য করা। সন্দেহজনক কোনব্যক্তি বা কোন কারণে ইউনিয়নে শামিত্ম বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনপরিস্থিতির উদ্ভব হলে সে সম্বন্ধে থানার ওসিকে এরা অবহিত করে এবং ১৫ দিনেঅমত্মত একবার তার কাছে রিপোর্ট করে। ইউনিয়নে কোন প্রকার মহামারীর আশংকাদেখা দিলে বা কোন বাঁধ বা সেচ প্রকল্পের কোন ক্ষতির সম্ভাবনা হলে বা ইউনিয়নপরিষদের কোন সম্পত্তি অন্যায় দখল হলে ইউনিয়ন পরিষদকে তা তখনই জানাতে হয়।তাছাড়া রেললাইন, টেলিফোন বা টেলিগ্রাম বা ইলেকট্রিক লাইন, টিউবওয়েল এবংঅন্যান্য সরকারি সম্পত্তি ক্ষতির সম্মুখীন হলে জনসাধারণ, মহল্লাদার বাদফাদার ইউনিয়ন পরিষদকে জানায়। সেই অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্টকর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহল্লাদার বা দফাদাররাম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ও ওয়ারেনট ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারে যেমন-কেউ যদি কোনআদালত অগ্রাহ্য অপরাধ করে, বা কারও কাছে কোন সিদেল যন্ত্র বা চোরাই মালথাকে বা কেউ হাজত থেকে পলায়ন করে গ্রামে আত্মগোপন করে ইত্যাদি। কিন্তুতাদেরকে যত শীঘ্র সম্ভব থানায় সোপর্দ করতে হয়। এছাড়া মহল্লাদারের আরেকটিঅন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা।
গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের গঠন ওকার্যাবলীর সাথে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সম্পৃক্ত। গ্রামপ্রতিরক্ষা দল গঠনের প্রধান উদ্দেশ্যাবলী হচ্ছে:
রাজস্ব ও প্রশাসন
নিজস্ব দায়িত্ব সম্পাদন ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ:
উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণ
গ্রাম উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছেইউনিয়ন পরিষদ। কৃষি ও কুটির শিল্পের উন্নতি এবং সমবায় আন্দোলনের বিসত্মারএবং বন, পশু ও মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন পরিকল্পনাগ্রহণ করে। ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন পরিকল্পনা এমনভাবে তৈরি করে যাতে একে যেসবদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যেমন-কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, কুটিরশিল্পইত্যাদি বিষয়ক প্রকল্পগুলো পৃথক পৃথকভাবে দেখানো হয়। নিম্নলিখিত তথ্যাদিউন্নয়ন পরিকল্পনায় লিপিবদ্ধ করা হয়:
প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ বিভিন্ন এলাকারচাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করে। উন্নয়নপরিকল্পনার মেয়াদ সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী হয়। তবে এযাবৎসরকারের নির্দেশমোতাবেক উন্নয়ন পরিকল্পনার মেয়াদ পাঁচ বছর করে হয়ে আসছে। বিভিন্ন এলাকারউন্নয়নমূলক কাজের চাহিদা একসঙ্গে বা এক বছরে মেটানো সম্ভব নয়, পরিষদেরআর্থিক সংগতিও পর্যাপ্ত নয়। এসব কারণে পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় দেখা হয়বৃহত্তর জনস্বার্থে এবং পরিষদের আর্থিক সংগতির দিকে লক্ষ্য রেখে কোন ধরনেরপ্রকল্প বা প্রকল্পগুলো প্রথম বছর, কোনগুলো দ্বিতীয় বছর, কোনগুলো তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বছরে কার্যকরী করা সম্ভব হবে। এক কথায় বিভিন্ন ধরনেরপ্রকল্পগুলোর সামগ্রিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঁচশালা পরিকল্পনা গ্রহণ করেইউনিয়ন পরিষদ। প্রতিবছর উন্নয়ন পরিকল্পনা খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করাহবে তা পাঁচশালা পরিকল্পনার ভিত্তিতে খরচ করা হয়, অন্যভাবে নয়। তবে যেপ্রকল্পগুলো আগে সম্পন্ন করা হয়েছে তার উন্নয়ন বা মেরামতের কাজ এক্ষেত্রেঅগ্রাধিকার পায়। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে একটি প্লানবুক আছে যার মধ্যেবিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নির্দেশ করা থাকে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ যাতেসুচারুরূপে সম্পাদিত হয় সেজন্য ইউনিয়ন পরিষদ বিভিন্ন কমিটি গঠন করে।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্প গ্রহণ ও বাসত্মবায়নের মূল লক্ষ্য হল:
(ক) গ্রামের বেকার, গরীব ও দুঃস্থ জনগণের কর্মসংস্থান করা ও স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি করা এবং সব সম্পদ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(খ) গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নভিত্তিকদরিদ্র ও বেকার এবং দুঃস্থ লোকদের সঠিক পরিসংখ্যান বাসত্মব জরিপের মাধ্যমেপ্রস্ত্তত করা। এ পরিসংখ্যান সর্বদা ইউনিয়ন পরিষদ সংরক্ষণ করবে এবং ইউনিয়নঅভ্যমত্মরে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে তাতে বেকার ও দরিদ্র এবংদুঃস্থ জনাংশের কর্মসংস্থানের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বিচার
বাংলাদেশের গ্রামীণ জনসাধারণেরঝগড়া-বিবাদের মীমাংসা ও মামলা মোকদ্দমা নিস্পত্তি এবং বিড়ম্বনা এবং এসংক্রামত্ম খরচের হাত থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সরকার গ্রামাঞ্চলেপ্রাথমিকভাবে বিচার ব্যবস্থার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের উপর ন্যাস্ত করেছেন।ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালত গঠনের মাধ্যমে কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী উভয়প্রকার মামলার বিচার করতে পারে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস